আল্লামা সাঈদীর রায় পরবর্তী গণহত্যা

তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দেশের প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে প্রহসনের রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিলে প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে সারাদেশ। ইসলামপ্রিয় মানুষ ছাড়াও সাঈদীভক্ত সর্বস্তরের লাখ লাখ জনতা রাস্তায় নেমে আসে। আল্লামা সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাতিল করে তার মুক্তির দাবিতে সারা দেশের গণবিক্ষোভ একপর্যায়ে গণবিস্ফোরণে রূপ নেয়। জনতা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদে নেমে আসে রাস্তায়। হরতাল ও অবরোধসহ ঘোষিত এবং অঘোষিত কর্মসূচিতে অচল হয়ে পড়ে দেশ। বিক্ষোভে ফেটে পড়া নারী-পুরুষের ওপর নির্বিচারে চালানো হয় গুলি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মুহুর্মুহু গুলিতে রক্তে রঞ্জিত হয় গোটা দেশের বহু জনপথ। মাত্র দুদিনের ব্যবধানে জামায়াত শিবিরের কর্মী ও সাধারণ মানুষসহ প্রায় পৌনে দুই শত মানুষ নিহত হন। নিহতদের মধ্যে রয়েছে চারজন নারী, চারটি শিশু, কিশোর, কৃষক, দিনমজুর, মুসল্লিসহ জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী। সারাদেশে একইসঙ্গে সাঈদী ভক্ত ও জামায়াত শিবিরের আন্দোলন-বিক্ষোভ সামাল দিতে ব্যর্থ হয় র‌্যাব ও পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন করা হয় বিজিবি ও সেনাবাহিনী।

এ সময়ের মধ্যে পাঁচ সহস্রাধিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত আরও ২০ সহস্র্রাধিক ব্যক্তি। রায় ঘোষণার পর দেশব্যাপী বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের নির্বিচার গুলিবর্ষণে বেশিরভাগ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এছাড়া যুবলীগ-ছাত্রলীগের তাণ্ডবেও হত্যার শিকার হন অনেকে। স্বাধীনতার পর মাত্র ৭ দিনে এত হত্যাকাণ্ডের নজির ইতিহাসে নেই। মানবাধিকার সংস্থাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি একে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, স্বাধীনতার পর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ এটি। এ ঘটনায় সবার কাছে এটা স্পষ্ট নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২৮ শে ফেব্রুয়ারীআল্লামা সাঈদীগনহত্যারায়